ভারতের দিল্লিতে অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন বক্তব্য-বিবৃতি দেওয়ায় ভারতীয় ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে ডেকে আবারও প্রতিবাদপত্র দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের মহাপরিচালক ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে ডেকে এই প্রতিবাদপত্র হস্তান্তর করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “ভারতকে আমরা লিখিতভাবে অনুরোধ করেছি, যাতে শেখ হাসিনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং যাতে তিনি এ ধরনের বক্তব্য-বিবৃতি না দেন; যেটি বাংলাদেশের বিপক্ষে যাচ্ছে। আমরা এটির কোনো জবাব পাইনি এখনও।”
তিনি বলেন, “গত কয়েক দিনের কার্যকলাপের কারণে আমরা আরও একবার তাদের প্রতিবাদপত্র দিয়েছি। ভারতীয় হাইকমিশনার এই মুহূর্তে নেই। তাদের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে ডেকে প্রতিবাদপত্র দিয়েছি, যাতে তাকে (শেখ হাসিনা) নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। তিনি যেসব বক্তব্য দিয়েছেন; যা প্রধানত মিথ্যা। সেটি বাংলাদেশে এক ধরনের অস্থিতিশীলতাকেও উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা অনুরোধ করেছি এই চর্চাটি বন্ধ করার জন্য।”
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্য ছিল অনেক বেশি আক্রমণাত্মক। সে কারণে হয়তো যুব সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে বেশি লেগেছে। আমরা ভারতকে অনুরোধ করেই যাচ্ছি, শেখ হাসিনাকে যেন বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করা হয়। আমরা দেখবো কী ঘটে এবং কী পদক্ষেপ নেয়। সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঢাকায় ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের কাছে হস্তান্তর করা প্রতিবাদ নোটের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সরকারের গভীর উদ্বেগ, হতাশা এবং গুরুতর আপত্তির কথা তুলে ধরেছে। কারণ, এ ধরনের বক্তব্য (শেখ হাসিনার) বাংলাদেশের জনগণের অনুভূতিতে আঘাত করছে। পাশাপাশি তার এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের প্রতি একটি শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত এবং দুই দেশের মধ্যে একটি সুস্থ সম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য সহায়ক নয় বলেও প্রতিবাদলিপিতে জোর দেওয়া হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত সরকারকে অবিলম্বে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছে। ভারতে থাকাকালীন অবস্থায় তাকে (শেখ হাসিনা) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং অন্যান্য যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে এ ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট এবং উসকানিমূলক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখতে ভারতকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর আগে, গত ছয় মাসে অন্তর্বর্তী সরকার আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলা, সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাসহ নানা ঘটনায় ঢাকায় ভারতীয় কূটনীতিকদের চারবার তলব করেছে।