অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে ছাত্র উপদেষ্টাসহ সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী জাতীয় নাগরিক পার্টি সংশ্লিষ্ট ছাত্র প্রতিনিধিদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। আজ শনিবার গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নুর বলেন, ‘ছাত্র-জনতার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দেড় দশকের ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও আগামীর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণ-অভ্যুত্থানের অংশীজনদের নিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় সরকার গঠনের জনআকাঙ্ক্ষা তৈরি হলেও দেশি-বিদেশি অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের কারণে সেটি হয়নি। একটি নির্দিষ্ট বলয় কেন্দ্রিক সরকার গঠিত হয়েছে। যার ফলে গণ-অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছিল আজ তাতে ফাটল ধরেছে, বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। যা এই মুহূর্তে জাতির জন্য কোনোভাবেই কাম্য ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘এমতাবস্থায় সরকারের থাকা ৩ ছাত্র উপদেষ্টাদের মধ্যে ১ জন পদত্যাগ করে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। তারুণ্যের রাজনৈতিক দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদ রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণকে সবসময় উৎসাহিত করে, নতুন দলকে স্বাগত জানায়।
তবে গণ-অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গুটিকয়েক ছাত্রনেতা সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় অযাচিত হস্তক্ষেপে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ জনগণের মধ্যে একটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। যেহেতু আন্দোলনের পরিচিত মুখ থেকে সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করেছে, সেহেতু সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা ও জনগণসহ রাজনৈতিক নেতাদের আস্থা ধরে রাখতে সরকারে থাকা অন্য দুই ছাত্র উপদেষ্টাসহ সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী সব ছাত্রদের পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি।’
নুর আরো বলেন, ‘আমরা বারবার বলে আসছি ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা গণ-অভ্যুত্থানের সরকারের ব্যর্থতা জাতিকে নতুন বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, গত ৬ মাসে গণহত্যার বিচার ও গণহত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
সরকারের দুর্বলতায় গণহত্যাকারীদের পুনর্বাসন হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ জনগণের নিরাপত্তা ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়েও সংকট তৈরি হচ্ছে।’