গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের ১৭ মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনও থামেনি ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞ। বিশ্বের দৃষ্টি যখন প্রায় নির্বিকার, তখন অবরুদ্ধ গাজাবাসীর পক্ষে মুখ খুলেছেন মুসলিম বিশ্বের শীর্ষ ধর্মীয় নেতারা। এবার প্রথমবারের মতো জায়নবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে জিহাদের ডাক দিয়ে একটি ঐতিহাসিক ফতোয়া জারি করেছেন তারা।
ধর্মীয় এই নির্দেশনায় বিশ্বের সকল মুসলিমকে গাজার গণহত্যা ঠেকাতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। মুসলিম আলেমদের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ মুসলিম স্কলারস (IUMS) এর পক্ষ থেকে ফতোয়াটি জারি করা হয়। সংগঠনের মহাসচিব, প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ আলী আল-কারাদাগী এই ঘোষণা দেন। তার এই ঘোষণাকে সমর্থন করেছেন আরও ১৪ জন বিশিষ্ট ইসলামী পণ্ডিত।
১৫ দফা সংবলিত এই ফতোয়ায় বলা হয়েছে, গাজার এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে মুসলিম দেশগুলোর ব্যর্থতা ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে গুরুতর অপরাধ। ফতোয়ায় বলা হয়, অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধ বন্ধে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক হস্তক্ষেপ করা সব মুসলিম দেশের জন্য জরুরি। এছাড়া ফতোয়ায় ইসরাইলের সঙ্গে মুসলিম দেশগুলোর যেকোনো ধরনের শান্তি বা সমঝোতা চুক্তি পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের উপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টি করতে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমদেরও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম ইরনা নিউজের বরাতে জানা যায়, ইসলামি আইনের আলোকে এই ফতোয়ায় ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি সুয়েজ খাল, বাব আল-মান্দেব ও হরমুজ প্রণালীসহ আন্তর্জাতিক সমুদ্র, আকাশ ও স্থলপথে ইসরাইলকে কোনো ধরনের সহায়তা প্রদানও নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
গাজার জনগণের উপর অব্যাহত বর্বরতার প্রেক্ষাপটে এই ফতোয়া মুসলিম বিশ্বের সামনে এক নতুন দায়িত্ব ও আত্মজিজ্ঞাসার বার্তা নিয়ে এসেছে। এটি প্রতিটি মুসলমানের কাছে নিজের নৈতিক ও মানবিক অবস্থান নতুনভাবে মূল্যায়নের একটি আহ্বান।