হাসি খুশি পারভেজকে নির্মমভাবে হত্যার খবর দেশবাসী জানেন। কিন্তু জানেন কি ভেতরের গল্প?পারভেজের হাসি ভালোভাবে না নিয়ে যখন তার প্রেমিককে খবর দেন ওই নারী, তখন কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বিষয়টি সেখানে মীমাংসা করে দেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অপরাধ না করেও ক্ষমা চান ছাত্রদল নেতা পারভেজ। কিন্তু তাতেও খুশি হতে পারেননি ওই নারী শিক্ষার্থী।প্রেমিককে কটাক্ষ করে দেন বকাবকি। পরে ভালোবাসার প্রমাণ দিতেই মীমাংসার মাত্র তিন মিনিটের মাথায় পারভেজকে এলোপাথারি আঘাত করে তার হৃদপিণ্ড দুই খন্ড করে দেন প্রেমিক।ব্যাপক রক্তক্ষরণে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন পারভেজ, চলে যান না ফেরার দেশে।
শিক্ষার্থী ও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের দোকানে সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন তারা। তাদের একজন প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পিয়াসের বান্ধবী।তখন পারভেজ সেখানে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার সময় হাসছিলেন। তিনি কেন হাসলেন, এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পিয়াসের বান্ধবী।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, হাফপ্যান্ট পরা এক যুবক পারভেজের বুকে ছুরি দিয়ে আঘাত করছে।পুলিশ বলছে, ওই যুবক বহিরাগত। শিক্ষার্থীদের দাবি, তার নাম নাসিম।
পারভেজ হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গতকাল সোমবার ভোরে মহাখালী থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।তারা হলো-আল কামাল শেখ, আলভী হোসেন জুনায়েদ ও আল আমিন সানী।সিসিটিভির ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্তের পর তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়ে তদন্তেও তাদের নাম উঠে আসে।তিনজনকে গতকাল আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
রিমান্ড শুনানিতে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মোহাম্মদ সানাউল্লাহ বলেন, “হিরোইজম দেখিয়েছে, জিরো হয়েছে। ওদের তো কোন ক্ষতি নেই, ক্ষতি ওদের বাবা-মায়ের।”পরে আদালত তিনজনের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ বলছে, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পারভেজ হত্যার প্রতিবাদ ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে গতকাল বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এবং কাকুলি এলাকায় বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।এছাড়া সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রদল।তবে আসামী প্রাইম এশিয়ার শিক্ষার্থী মেহেরাজ, পিয়াস ও মাহাথিরকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি।