জুলাই হত্যা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারা বেগম (আনু)-কে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় সামাজিক ও প্রশাসনিক মহলে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনায় ভুক্তভোগী একজন তরুণ নিজের সাথে ঘটে যাওয়া অভিজ্ঞতার বিষয়ে মুখ খুললেন। তিনি বর্তমানে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে কর্মরত। হৃদয়স্পর্শী বর্ণনায় দিদার নূর নামের এই কর্মকর্তা জানান, কীভাবে একজন শিক্ষকের অবিচার কিংবা দায়িত্বহীনতা একজন মেধাবী তরুণের জীবনকে বিভীষিকায় ফেলতে পারে।
পোস্টে তিনি লেখেন, ৩৬ তম বিসিএসে উনার বোর্ডে ভাইভা দিয়েছিলাম। তার মত এমন রাগী ও বদমেজাজি মহিলা আমি খুব কমই দেখেছি। লিখিত পরীক্ষায় ৫৭৩ পেয়েও তার কারণে আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গিয়েছিল কারণ তিনি আমাকে ভাইবায় ফেল করিয়ে দিয়েছিলেন।
তিনি আরো লেখেন, ভাইবায় ফেলের বিষয়টি লজ্জায় কাউকে কখনো বলিনি (সবাই জানতো ননক্যাডার)। কোনো এক অজানা কারণে ভাইভা বোর্ডে তিনি আমার সাথে চরম দুর্ব্যবহার করেছিলেন যদিও আমি ৯০% প্রশ্নের উত্তরই দিতে পেরেছিলাম। লিখিত পরীক্ষা ভাল দিয়েও আমার মত আরও অনেক ক্যান্ডিডেটের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিল তার বেইনসাফির কারণে। মানুষের বদদোয়া খুব খারাপ জিনিস। তা কখনো না কখনো প্রতিঘাত হয়ে ফিরে আসবেই।
আবদুর রহমান নামে এক ভুক্তভোগী লিখেছেন, ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত আমার মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড থাকার ফলে বিসিএস ভাইভাতে এই সম্মানিত সাবেক পিএসসি সদস্য তার আচরণের মাধ্যমে আমাকে যে নাজেহাল করেছিল, তা কখনো ভুলার মতো নয়। ভাইভা পর থেকে চূড়ান্ত রেজাল্ট হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্তে মনে হয়েছে আমাকে ভাইভাতে ফেল করাবে। যাইহোক ভাগ্য অত্যন্ত ভালো ছিল তাই ফেলের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছিলাম।
অন্য এক যুবক লিখেছেন, পিএসসি’র সাবেক সদস্য অধ্যাপক আনোয়ারা ম্যাডাম। উনি ছিলেন প্রাইমারি স্কুলের টিচার। এরপর একটি এমপিওভুক্ত কলেজে জয়েন করেন। এরপর সেই কলেজ থেকে স্বামীর সহযোগিতায় বদলি হয়ে আসেন জগন্নাথ কলেজে। পরবর্তীতে জগন্নাথ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর হলে তিনি সেখানে থেকে যান। মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় পরবর্তীতে হয়ে যান পিএসসি’র সদস্য। নিজে কোটায় জব পাওয়ায় কোটার প্রতি তার দুর্বলতা ছিল চরম।