কলকাতার কাঁদছে ব্যবসায়ীরা, বাড়ছে মোদির বিরুদ্ধে জনরোষ

কলকাতার নিউ মার্কেটে রমজান মানেই ছিল ব্যস্ততা, লোকারণ্য, আর কেনাকাটার ধুম। পা গলানোই ছিল দুষ্কর, দোকানিদের দম ফেলার ফুসরাত ছিল না। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলত বেচাকেনা। তবে এবার বদলে গেছে দৃশ্যপট—ভিড়ে ঠাসা নিউ মার্কেটে এখন একরকম সুনসান নীরবতা।

হঠাৎ এমন কেন হলো?

উত্তর খুঁজতে যেতে হবে ৫ আগস্টের বাংলাদেশে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন ঘটে। এই সুখবরেই ভারতের কপালে পড়ে চিন্তার ভাঁজ। হাসিনার পতনে মোদি প্রশাসন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। বাংলাদেশকে বাগে আনতে মরিয়া হয়ে ওঠে নয়া দিল্লি। প্রতিশোধের সিদ্ধান্ত হিসেবে বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ হয় পর্যটন ভিসা, কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় মেডিকেল ভিসাতেও।

উল্টো ফল ভোগ করছে ভারত

তবে সাত মাসের মধ্যেই এই সিদ্ধান্তের ফল ভোগ করতে হচ্ছে ভারতকেই। বিশেষ করে কলকাতার ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। পর্যটন খাত ধসে পড়ছে, মেডিকেল খাতেও বড় ধাক্কা লেগেছে। নিউ মার্কেট, ট্রেজার আইল্যান্ড, সিম্পার্ক মল, আশপাশের বাজার—সবখানেই ব্যবসা একরকম স্থবির।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিউ মার্কেটের মোট ব্যবসার ৫০-৫৫ শতাংশই নির্ভর করত বাংলাদেশি ক্রেতাদের উপর। রমজানে এই সংখ্যা আরও বেড়ে যেত, কারণ ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়ে যেত রোজার প্রথম দিকেই। এবার সেই দৃশ্য নেই।

ব্যবসায়ীদের হতাশা, ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

বাংলাদেশি পর্যটকদের অভাবে শুধু বড় ব্যবসায়ীরাই নয়, খুচরা বিক্রেতারাও বিপাকে পড়েছেন। হোটেল ব্যবসা সংকটে, মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র, পরিবহন পরিসেবা সবই ক্ষতির মুখে। কলকাতার মধ্যাঞ্চলের প্রায় ১০০টির বেশি হোটেল এবং ৩,০০০ দোকান বাংলাদেশি ক্রেতাদের উপর নির্ভরশীল। অনেক দোকানদার এখন দোকান ভাড়া চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন, কেউ কেউ দোকান বন্ধ করতেও বাধ্য হয়েছেন।

Scroll to Top