পৃথিবী ধ্বংসের দিনক্ষণ জানালেন NASA-র বিজ্ঞানীরা!

এক সময় মানুষ প্রকৃতির সান্নিধ্যেই দিন কাটাতো। গাছের ছায়া, নদীর কলকল ধ্বনি, পাখির ডাকে ভোর হওয়া—সবই ছিল জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু আধুনিক সভ্যতা ও প্রযুক্তির নাম করে আমরা প্রতিনিয়ত প্রকৃতিকে ধ্বংস করে চলেছি। যার ভয়াবহ ফলশ্রুতিতে বাড়ছে বিশ্ব উষ্ণায়ন, হুমকির মুখে পড়ছে পৃথিবীর ভারসাম্য। প্রাকৃতিক বিপর্যয়, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বরফ গলা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি—সবই যেন ধীরে ধীরে আমাদের অস্তিত্ব বিলীন করে দিচ্ছে।

প্রতিদিন হারিয়ে যাচ্ছে অসংখ্য গ্রাম, শহর ও কোটি কোটি প্রাণ। আমরা নিজেরাই হয়ে উঠছি আমাদের ধ্বংসের কারণ। তাই আজ অনেকেই ভাবছে, পৃথিবীর শেষ কবে? সত্যিই কি পৃথিবী একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সম্প্রতি এক যুগান্তকারী গবেষণা পরিচালনা করেছে NASA ও জাপানের তোহো ইউনিভার্সিটি। তাদের একদল বিজ্ঞানী উন্নত সুপার কম্পিউটার ও গাণিতিক মডেল ব্যবহার করে ভবিষ্যতের পৃথিবী সম্পর্কে একটি চমকে দেওয়া পূর্বাভাস দিয়েছেন।

তাদের গবেষণা অনুযায়ী, আর মাত্র ১ বিলিয়ন বছর—অর্থাৎ ১০০ কোটি বছর পর পৃথিবী এতটাই প্রতিকূল হয়ে উঠবে যে, এখানে কোনো প্রাণের অস্তিত্ব থাকবে না।

এই গবেষণায় সবচেয়ে ভয়ংকর যে তথ্য উঠে এসেছে তা হলো—পৃথিবীর ধ্বংসের জন্য দায়ী থাকবে সূর্য নিজেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের কেন্দ্রস্থল আরও বেশি গরম হয়ে উঠবে, যার ফলে তার তাপমাত্রা ও বিকিরণ এতটাই বেড়ে যাবে যে, তা আশেপাশের গ্রহগুলো—বিশেষ করে পৃথিবীকে পুড়িয়ে ফেলবে।

গবেষকদের গণনা অনুযায়ী, ৯৯৯,৯৯৯,৯৯৬ সাল নাগাদ পৃথিবীর উপর সূর্যের তাপ এমন মাত্রায় পৌঁছাবে যে, জীবনধারণ একেবারে অসম্ভব হয়ে উঠবে। আর ১,০০০,০০২,০২১ সাল নাগাদ পৃথিবীর সব রকম প্রাণ একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

যদিও এই ধ্বংস এখনই আসছে না, তবুও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন—এটা এক ধরনের সতর্ক সংকেত। বিশ্ব উষ্ণায়ন, পরিবেশদূষণ, গ্লোবাল ক্লাইমেট চেঞ্জ—সবকিছুই মানবজাতির অস্তিত্বকে ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই এখনই প্রয়োজন পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন, সচেতনতা এবং প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।

এই গবেষণার মাধ্যমে মানবজাতিকে এক স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা—পৃথিবী চিরস্থায়ী নয়, আর প্রকৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে টিকে থাকা সম্ভব নয়। আমরা যদি এখনই নিজেদের জীবনযাত্রা না বদলাই, তবে এই ভবিষ্যৎ হয়তো সময়ের আগেই আমাদের সামনে এসে দাঁড়াবে।

তথ্যসূত্র: NASA ও তোহো ইউনিভার্সিটির যৌথ গবেষণা, আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা জার্নাল

Scroll to Top