পাকিস্তান চীন থেকে যেসব অস্ত্র পেয়েছে

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার আবহে প্রশ্ন উঠছে, যদি সংঘর্ষ বাঁধে তাহলে পাকিস্তানের পাশে কেমন করে থাকবে চীন? বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধের সরাসরি ময়দানে চীন না এলেও, পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতার একটি বড় অংশই চীনের ওপর নির্ভরশীল।

পাকিস্তান ও চীনের সম্পর্কের ওপরে গভীরভাবে নজর রাখেন, এমন একজন বিশেষজ্ঞ কায়েদ-এ-আজম ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুহম্মদ শোয়েব। তিনি বলছেন যে, চীন সবসময়েই নিরপেক্ষতা বজায় রাখে আর ভারত ও পাকিস্তান দুই পক্ষকেই সংযত হতে বলে থাকে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে চীনের ভূমিকা বহু পুরনো ও গভীর। অধ্যাপক শোয়েব জানিয়েছেন, ভারতীয় নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর গতিবিধি সম্পর্কে জানার জন্য পাকিস্তানকে চীনের উপগ্রহ তথ্য ও গোয়েন্দা সহায়তার ওপর নির্ভর করতে হয়। এছাড়া, চোখে দেখা না যাওয়া শত্রুকে লক্ষ্য করার মতো বিভিআর (বিয়ন্ড ভিজুয়্যাল রেঞ্জ) প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রেও চীনই প্রধান উৎস।

তাঁর দাবি, গত পাঁচ বছরে পাকিস্তানে আসা প্রতিটি পাঁচটি অস্ত্রের মধ্যে চারটিই এসেছে চীন থেকে। ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হলে এসব চীনা অস্ত্রই ব্যবহৃত হবে।

বেইজিংয়ের তাই হে ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো আইনার ট্যাঙ্গেন জানান, চীন পাকিস্তানকে ইতিমধ্যেই দিয়েছে পিএল-১৫ এবং এসডি-১০ ধরনের অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র। এগুলো ‘বিয়ন্ড ভিজুয়্যাল রেঞ্জ’ বা বিভিআর প্রযুক্তির সাহায্যে বহু দূরের শত্রু বিমানে নিশানা করে আঘাত হানতে পারে। তবে ট্যাঙ্গেন স্পষ্ট করেন, এই অস্ত্র সরবরাহ সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রতিক্রিয়ায় নয়, বরং একটি সামরিক চুক্তির আওতায় আগেই স্বাক্ষরিত।

এদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত ও পাকিস্তান—উভয় দেশেরই পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে বলেই এখনো সরাসরি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের সম্ভাবনা কম। তবুও সীমান্তে সাময়িক সংঘর্ষ বা সীমিত সংঘাতের ক্ষেত্রে এই চীনা অস্ত্রই পাকিস্তানের অন্যতম শক্তি হতে চলেছে।

প্রসঙ্গত, বিগত বছরগুলিতে পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে শুধু সমরাস্ত্রই নেয়নি, বরং গোটা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় একটি ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ে উঠেছে। পাকিস্তানের সামরিক মহলের মতে, বায়ু থেকে সমুদ্র—সব ক্ষেত্রেই চীনের দেওয়া প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম ছাড়া পাকিস্তান কার্যত অচল।

সব মিলিয়ে, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ যদি প্রকট হয়, তবে যুদ্ধক্ষেত্রে চীন সরাসরি না থাকলেও, তাদের দেওয়া অস্ত্রই যে পাকিস্তানের প্রধান ভরসা হবে, তা স্পষ্ট।

Scroll to Top