অতিরিক্ত ঘুম ডেকে আনতে পারে মা’রাত্ম’ক রো’গ! জানুন এর কু’ফল

সুস্থ জীবনযাপনের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। এটি যেমন সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে শরীরকে পুনরায় সক্রিয় করে তোলে, তেমনই ঘুমের অভাব ডেকে আনতে পারে নানা স্বাস্থ্য জটিলতা। তবে, শুধু কম ঘুমই নয়, প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুমও শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ডায়েবেটিস থেকে শুরু করে বন্ধ্যাত্বের মতো মারাত্মক রোগ পর্যন্ত হতে পারে অতিরিক্ত ঘুমের কারণে। আসুন, জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত ঘুমালে শরীরে কী কী রোগ বাসা বাঁধতে পারে:

মাথাব্যথা: ঘুম আমাদের শরীরে সেরোটোনিন হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অতিরিক্ত ঘুম এই সেরোটোনিনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং নিউরোট্রান্সমিটারের স্বাভাবিক কার্যকারিতায় বাধা সৃষ্টি করে। এর ফলে অনেকেই সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার পর তীব্র মাথাব্যথার অভিযোগ করেন। দীর্ঘক্ষণ ঘুমানোর পর শরীরে হঠাৎ ক্ষুধা ও তৃষ্ণা অনুভূত হওয়ার কারণেও মাথাব্যথা শুরু হতে পারে।

অবসাদ বা ডিপ্রেশন: অতিরিক্ত ঘুম মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। ঘুমের স্বাভাবিক চক্র বা স্লিপিং সাইকেল ব্যাহত হলে শরীরে উৎকণ্ঠা এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা ধীরে ধীরে ডিপ্রেশনের দিকে মোড় নিতে পারে।

ক্লান্তি ও দুর্বলতা: শুনতে অবাক লাগলেও, অতিরিক্ত ঘুমের একটি বড় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল ক্লান্তি অনুভব করা। অত্যধিক ঘুমে শরীরের স্বাভাবিক দেহঘড়ির কাজকর্ম ব্যাহত হয়। অতিরিক্ত বিশ্রামের কারণে পেশী এবং স্নায়ু দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে সামান্য শারীরিক চাপ নিতেও সমস্যা হয়।

ডায়েবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি: অতিরিক্ত ঘুম শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, বিশেষ করে ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনগুলি এর দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়। বেশি ক্লান্ত বোধ করার কারণে শরীরে শক্তির অভাব দেখা দেয়, যার ফলে জাঙ্ক ফুড বা উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এই অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং ডায়েবেটিসের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।

বন্ধ্যাত্বের সম্ভাবনা: অতিরিক্ত ঘুমের খারাপ প্রভাব নারীদের প্রজনন ক্ষমতার উপরও পড়তে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যে নারীরা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) থেরাপিতে আছেন, তাদের মধ্যে যারা প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমান, তাদের গর্ভধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে, যারা ছয় ঘণ্টা বা তার কম ঘুমান তাদের গর্ভধারণের সম্ভাবনা ৪৬ শতাংশ এবং যারা নয় থেকে এগারো ঘণ্টা ঘুমান তাদের এই সম্ভাবনা ৪৩ শতাংশে নেমে আসে।

সুতরাং, সুস্থ থাকতে যেমন পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন, তেমনই অতিরিক্ত ঘুমও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানোই শরীরের জন্য আদর্শ। অতিরিক্ত ঘুমের অভ্যাস ত্যাগ করে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখা জরুরি।

Scroll to Top