অফিসের মিটিংয়ের সময় ভুলে যাওয়া, বাজার থেকে কী আনতে হবে মনে না থাকা কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মনে না রাখা— স্মৃতিভ্রষ্টতার এই সমস্যাগুলো এখন আর শুধু বয়স্কদের সীমাবদ্ধ নয়। অল্প বয়সিদের মধ্যেও দিন দিন এই সমস্যা বাড়ছে। তবে আশার খবর হলো, ব্রেন গেম কিংবা পর্যাপ্ত ঘুমের পাশাপাশি রোজমেরির গন্ধ শুঁকেও স্মৃতিশক্তি বাড়ানো সম্ভব বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।
নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, রোজমেরির গন্ধ শুঁকলেই মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বেড়ে যায় এবং স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে। গবেষণা অনুযায়ী, রোজমেরি তেল শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করলে মনোযোগ বাড়ে এবং স্মৃতিশক্তি প্রায় ৭৫% পর্যন্ত উন্নত হতে পারে। রোজমেরি থেকে নির্গত অ্যাসিটাইলকোলিন নামক রাসায়নিক নার্ভ সেলগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপনকে আরও কার্যকর করে, যা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রাচীন ইতিহাসেও রোজমেরির ব্যবহার
রোজমেরির গুণাগুণ নতুন কিছু নয়। প্রাচীন গ্রিক, মিশরীয় এবং রোমান সভ্যতায়ও এর ব্যবহারের প্রমাণ মেলে। অ্যারোমাথেরাপির মতো প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোজমেরির ব্যবহার বহুল প্রচলিত। শুধু স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিই নয়, বার্ধক্যজনিত স্মৃতিভ্রষ্টতা ও ডিমেনশিয়ার মতো সমস্যার প্রতিরোধেও এটি কার্যকর বলে প্রমাণ মিলেছে।
রোজমেরির আরও কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা:
অ্যান্টি-এইজিং প্রভাব: বয়সের ছাপ প্রতিরোধে কার্যকর।
হজমে সহায়ক: রোজমেরি হজমে সহায়তা করে এবং পেটের গ্যাস কমাতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণ: প্রদাহ কমায় এবং শরীরকে ফ্রি রেডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
ক্যানসার প্রতিরোধ: গবেষণায় দেখা গেছে, রোজমেরি ক্যানসার কোষের বিস্তার রোধ করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোজমেরি তেল ব্যবহারে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে, তবে অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চলা ভালো। ঘরে রোজমেরি তেল ব্যবহার করে অ্যারোমাথেরাপি শুরু করা যেতে পারে স্মৃতিশক্তি ও মানসিক সুস্থতার জন্য।
স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে ও মানসিক সক্ষমতা বাড়াতে তাই দৈনন্দিন জীবনে রোজমেরির ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা।
