এস আলমের লুটপাটের ভয়াবহ চিত্র বেরিয়ে এলো

দেশের শীর্ষ অলিগার্কদের ব্যাংক লুট, কর ফাঁকি এবং অর্থপাচারের ভয়াবহ কাহিনী প্রকাশ করেছেন দুই আয়কর কমিশনার। চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগ্রুপ এস আলমের ব্যাংক লুট বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম স্ক্যাম হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বলে তারা জানান। এছাড়াও ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তা এবং চলমান অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিষয়েও বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে আয়কর গোয়েন্দাদের এক কর্মশালায় এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়। আয়কর কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, রাজনৈতিক শক্তি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অলিগার্করা আবারও অবৈধ উপায়ে সম্পদ সংগ্রহের পথ খুঁজবে।

এস আলম গ্রুপ বর্তমানে অর্ধডজনেরও বেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি কোটি কোটি টাকা লুট করেছেন, যার একটি বড় অংশ অজানা গন্তব্যে পাচার করা হয়েছে। বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইসি এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি ও অর্থপাচারের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত সিআইসি দুই লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করেছে। সিআইসি মহাপরিচালক জানান, এস আলম সিঙ্গাপুরে তার দুই ছেলের নাগরিকত্ব কেনার জন্য শত কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। এছাড়া, এক শীর্ষ ধনীর স্ত্রীর একটি লকার থেকে ১৫ কোটি টাকার হিরা উদ্ধার হওয়ার ঘটনাও প্রকাশ পেয়েছে।

এই সপ্তাহে এক ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ১২১ কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন এনবিআর কর্মকর্তারা।

এনবিআর চেয়ারম্যান সতর্ক করে বলেন, যদি অর্থপাচার এবং কর ফাঁকি রোধ করা না যায়, তবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তিনি ব্যাংক কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান, কর আদায় নিশ্চিত করতে তারা যেন সব ধরনের সহযোগিতা করেন।

আয়কর কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, রাজনৈতিক ক্ষমতা পরিবর্তিত হলে অলিগার্করা তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাওয়ার জন্য পুনরায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তা নিতে পারে। তাই এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Scroll to Top