বহুল আলোচিত সাবেক শ্রমিক লীগ নেতা ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী তুফান সরকারের পুলিশ হেফাজতে গোপন বৈঠকের ঘটনা ফাঁস হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে এবং এক কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তুফান সরকারকে আদালতে হাজির করা হলে পুলিশের শিথিলতার সুযোগে তিনি নারী হাজতখানায় তার স্ত্রী, শাশুড়ি ও এক আইনজীবীর সহকারীর সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন। গণমাধ্যমকর্মীদের নজরে এলে পুলিশ শুরুতে বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আটক করা হয়।
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আদালতে কর্তব্যরত এটিএসআই জয়নালকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বগুড়ার অপরাধ জগতে তুফান সরকার ও তার বড় ভাই মতিন সরকারের নাম দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা এই দুই ব্যক্তি বছরের পর বছর চাঁদাবাজি, ভূমি দখল, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন।
২০১৭ সালে তুফান সরকার দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন এক ভয়াবহ নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায়। অভিযোগ ছিল, এক তরুণীকে কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে তিনি ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় ওই তরুণী ও তার মায়ের মাথা ন্যাড়া করে দেন। এই নির্মম ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র নিন্দার ঝড় ওঠে এবং পুলিশের তৎপরতায় তুফান সরকারসহ তার সহযোগীরা গ্রেপ্তার হন।
সাজাপ্রাপ্ত একজন আসামির এভাবে বিশেষ সুবিধা পাওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। জনমনে বিস্ময় জেগেছে, কীভাবে কারাগারে থেকেও তিনি এমন অনৈতিক সুবিধা পেতে পারেন?
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল—অপরাধ যত বড়ই হোক, একদিন না একদিন সত্য প্রকাশ হবেই।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ