মাগুরার চাঞ্চল্যকর ৮ বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আরও তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে সোমবার। এর আগের দিন রোববার মামলার বাদীসহ তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করা হয়েছে।
ওই দিন আরও ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। এদিকে আদালতে নেওয়ার সময় মামলার মূল আসামি হিটু শেখ সাংবাদিকদের দেখে চিৎকার করে বলেন- ‘আমার ছেলের বউ এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’ ২৩ এপ্রিল মামলাটির চার্জ গঠনের পর সোমবার মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এদিন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান ধর্ষণের শিকার শিশুটির চাচা ইবরাহিম শেখ, মাগুরা পৌর কবরস্থান মাদ্রাসার শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন এবং মো. হযরত নামে ১১ বছরের একটি শিশুর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
এ সময় মামলায় অভিযুক্ত মূল আসামি ধর্ষণের শিকার শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, তার স্ত্রী জাহেদা বেগম এবং দুই ছেলে সজিব শেখ এবং রাতুল শেখ উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সরকারপক্ষের আইনজীবী মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল বলেন, প্রথম দিন রোববার মামলার বাদী শিশুটির মা এবং ১ ও ২নং সাক্ষীর পর দ্বিতীয় দিন পরবর্তী ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এ সময় মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী সোহেল আহমেদ উপস্থিত সাক্ষীদের নানাভাবে জেরা করেছেন। মঙ্গলবার আরও ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে বলে সরকারপক্ষের আইনজীবী জানান।
তবে সোমবার সকালে সাক্ষ্যগ্রহণের আগে আসামিদের আদালতে নেওয়ার সময় মামলার মূল আসামি হিটু শেখ সাংবাদিকদের দেখে চিৎকার করে বলেন- ‘ভালো করে তদন্ত করে দেখেন। আমার ছেলের বউ এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’ আবার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় শিশুটির বোনজামাই সজিব শেখ সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘ঘটনা ঘটেছে বেলা ১১টার দিকে। আমরা কেউ তখন বাড়ি ছিলাম না। অথচ তারা বলছে রাত ২টায় ঘটেছে।’
এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে সারা দেশে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামেন। স্থানীয় আইনজীবীরাও এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দাবির পাশাপাশি আসামিপক্ষকে কোনোপ্রকার আইনি সহায়তা না দেওয়ার ঘোষণা দেন।
মামলার মূল আসামি শিশুর বোনের শ্বশুর হিটু শেখ গত ১৫ মার্চ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। যেখানে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় তিনি একাই জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দিলেও গত ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাগুরা সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মামলার চার আসামির বিরুদ্ধেই অভিযোগ এনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। গত ২৩ এপ্রিল মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক এম জাহিদ হাসান সাক্ষীদের শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন।