উচ্চ আদালতের বিশেষ নির্দেশনা, চার শ্রেণীর ব্যক্তি কোনভাবেই পাবেনা ওয়ারিশ সম্পত্তির ভাগ

বাংলাদেশের প্রচলিত আইন এবং কাস্টমারি ল অনুযায়ী উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পত্তি পাওয়ার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সাধারণত কেউ যদি তাদের ওয়ারিশান সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়, তবে আদালতের মাধ্যমে তারা তাদের অংশ বুঝে পাওয়ার আইনগত অধিকার রাখে। তবে চার শ্রেণীর ব্যক্তি আছেন, যারা উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনোভাবেই তাদের ওয়ারিশান সম্পত্তির অংশ দাবি করতে পারবেন না – এমনকি আদালতের আশ্রয় নিলেও না। নিচে সেই চার শ্রেণীর ব্যাখ্যা তুলে ধরা হলো:

১. হেবা বা দানপত্রে সম্পত্তি হস্তান্তর:
যদি একজন ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় স্বেচ্ছায় হেবা (দান) দলিলের মাধ্যমে সম্পত্তি অন্য ওয়ারিশদের নামে লিখে দেন এবং তা বৈধভাবে প্রমাণিত হয়, তাহলে বঞ্চিত ওয়ারিশরা সেই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করতে পারবেন না। যদি তারা প্রমাণ করতে না পারেন যে দলিলটি জাল, মিথ্যা, মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় করা, বা প্রতারণার মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে, তাহলে আদালত থেকেও কোনো প্রতিকার পাবেন না।

২. উত্তরাধিকারকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত:
যদি কোনো ব্যক্তি তার উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পত্তি পাওয়ার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে পিতা বা মাতাকে হত্যা করেন এবং এটি আদালতে প্রমাণিত হয় ও তিনি সাজাপ্রাপ্ত হন, তাহলে তিনি ওই সম্পত্তির উত্তরাধিকার হতে চিরতরে বঞ্চিত হবেন। সাজা ভোগের পরও তিনি সম্পত্তির মালিকানা দাবি করতে পারবেন না।

৩. ধর্মত্যাগ বা ধর্মান্তর:
মুসলিম আইন অনুযায়ী, যদি কোনো মুসলিম ওয়ারিশ ইসলাম ত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী সম্পত্তির অংশ পাবেন না। আদালতে গেলেও সাধারণত তার পক্ষ গ্রহণ করা হয় না, যদি না বিশেষ কোনো প্রেক্ষাপটে আদালত ভিন্ন রায় দেয়।

৪. কন্যাদের পৈতৃক বসতভিটার অংশ:
হাইকোর্টের বিশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, কন্যাসন্তানগণ সাধারণ সম্পত্তির অংশ পেলেও পৈতৃক বসতভিটার অংশ দাবি করতে পারবেন না, যদি তারা বিবাহিত এবং স্বামীর সংসারে বসবাস করেন। আদালতের রায় অনুসারে, বসতভিটার অংশ থেকে তাদের সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত করা যায় এবং তারা আদালতের মাধ্যমেও তা উদ্ধার করতে পারবেন না।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: এসব সিদ্ধান্ত হাইকোর্ট ও শরীয়াহ ভিত্তিক আইন এবং কাস্টমারি ল অনুযায়ী গৃহীত। যেকোনো বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতিতে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।

Scroll to Top