ভূমি অফিসে আর যেতে হবে না: প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা, কী করবেন এখন ভূমি মালিকরা?

দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস। তিনি জানিয়েছেন, এখন থেকে ভূমি মালিকদের আর ভূমি অফিসে যেতে হবে না; ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে ভূমি সম্পর্কিত সকল সেবা গ্রহণ করা যাবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাজধানীতে অনুষ্ঠিত “ভূমি মেলা ২০২৫”-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন তিনি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “ভূমি ব্যবস্থাপনাকে অটোমেশনের আওতায় এনে একটি সমন্বিত, স্বচ্ছ ও গতিশীল সেবা চালু করতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে।”

ড. ইউনুস জানান, আগামী জুন-জুলাই মাসের মধ্যে সারাদেশে ভূমি ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি অটোমেশনে চলে যাবে। এতে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান, নামজারি, খতিয়ান ও মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ, দলিল যাচাইসহ প্রায় সব ধরনের সেবা ঘরে বসেই অনলাইনে করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগরীতে পরীক্ষামূলকভাবে পাঁচটি ‘ভূমি সহায়তা কেন্দ্র’ চালু হয়েছে এবং জুন মাসের মধ্যে দেশের সাতটি বিভাগীয় শহরসহ পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এই সেবা সম্প্রসারিত হবে।

আরও পড়ুনঃ মেগাপ্রকল্প গিলতেও পারছি না ফেলতেও পারছি না, কর্ণফুলী টানেল সম্পর্কে যা বললেন উপদেষ্টা
সরকারের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য:

* অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান ও দাখিলা সংগ্রহ

* নামজারি, খতিয়ান সংশোধন, জমাভাগ, জমা একত্রীকরণ প্রক্রিয়ার ডিজিটাল রূপান্তর

* একটি সমন্বিত ও ইন্টার-অপারেবল ভূমি উপাত্তভাণ্ডার তৈরি

* ই-রাজস্ব আদালতের মাধ্যমে ভূমি সংক্রান্ত ডিজিটাল বিরোধ নিষ্পত্তি

ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির সব তথ্য সহজে নাগরিকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া

প্রধান উপদেষ্টা জানান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বর্তমানে ৫,২৪৭টি অফিসে এই অটোমেশন প্রযুক্তি চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এর মাধ্যমে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের ভূমি অফিসগুলো এক প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত হবে। সাধারণ জনগণ ঘরে বসেই তাদের ভূমি সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য ও সেবা পাবেন।

ড. ইউনুস আরও বলেন, “এই প্রযুক্তিগত রূপান্তরের মাধ্যমে দুর্নীতি, হয়রানি ও জটিলতা কমবে, ভূমি সেবা হবে অধিক জনবান্ধব ও স্বচ্ছ।” তিনি সবাইকে ৩০ জুনের মধ্যে নিজ নিজ জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের আহ্বান জানান।

Scroll to Top