হেলিকপ্টার থেকে গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন হাসিনা, অডিও ভাইরাল

ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ক্ষমতা ছাড়ার আগে তিনি আন্দোলন দমন করতে নানাভাবে চেষ্টা করেছিলেন।

সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক ফাঁস হচ্ছে শেখ হাসিনার টেলিফোন সংলাপ, যেখানে আন্দোলন দমনের নানা পরিকল্পনার তথ্য উঠে আসছে। সর্বশেষ ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডে জানা গেছে, আন্দোলন দমাতে তিনি প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এমনকি হেলিকপ্টার থেকে গুলির নির্দেশও দেন তিনি।

নতুন ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, গোয়েন্দা সংস্থার এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে শেখ হাসিনা স্পষ্ট নির্দেশ দিচ্ছেন, আন্দোলন দমনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করতে। তিনি বলেন, “এখন লেথাল উইপেন (প্রাণঘাতী অস্ত্র) ব্যবহার করবেন। যেখানে পাবেন সেখানেই গুলি করবেন। আর হেলিকপ্টার থেকে গুলি করবেন।”

উক্ত কর্মকর্তার প্রশ্ন ছিল, আন্দোলনকারীদের ছবি দেখে তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা সম্ভব কি না। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “সবগুলিকে অ্যারেস্ট করতে বলছি রাতে। র‍্যাব-ডিজিএফআই সবাইকে বলা হয়েছে যেখানে যাকে পাবে ধরে ফেলবে।” তিনি আরও বলেন, “যেখানে গ্যাদারিং হবে, সেখানেই হেলিকপ্টার থেকে গুলি করতে বলেছি। অলরেডি কয়েক জায়গায় করেছেও।”

অডিওতে আরও শোনা যায়, মোহাম্মদপুর থানার দিকে আন্দোলনকারীদের একটি দল যাচ্ছে বলে জানানো হলে, শেখ হাসিনা বলেন, “ওখানে র‍্যাব রে পাঠাই দিক।” গোয়েন্দা কর্মকর্তা তখন বলেন, “আপনার নির্দেশনা লাগবে।” উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, “ওপেন নির্দেশনা দেয়া আছে, এখন লেথাল উইপেন ব্যবহার করবেন। যেখানে পাবেন সেখানেই গুলি করবেন।”

ফাঁস হওয়া অডিও কল থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, ক্ষমতা ধরে রাখতে শেখ হাসিনা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ করতে নির্দেশ দেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরম দৃষ্টান্ত।

এই অডিও ফাঁস হওয়ার পর দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। সাধারণ জনগণের প্রশ্ন, আন্দোলনকারীদের দমনে এত দূর যেতে হলো কেন?

শেখ হাসিনার ভাইরাল হয়ে যাওয়া সেই অডিও রেকর্ড শুনতে পারবেন এই লিংক থেকে।

Scroll to Top