মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন প্রকাশের ঘটনায় প্রথম আলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এবং সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
‘জামায়াত-শিবির চাঁদাবাজির সাথে সম্পৃক্ত নয়, এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য’
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘চাঁদা না পেয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ শিবিরকর্মীদের বিরুদ্ধে’—এই শিরোনামে দেশের বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদীতে ঈদের আগে চাঁদা না পেয়ে ইসলামী ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে সড়কে ফেলে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। যেখানে ভুক্তভোগী তাঁর বক্তব্যে অভিযুক্তদের ছাত্রশিবিরকর্মী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তবে প্রথম আলো ছাত্রশিবিরের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তির বক্তব্য গ্রহণ না করে একপাক্ষিকভাবে এবং যাচাই-বাছাই ছাড়া ছাত্রশিবিরকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন প্রচার করেছে, যা সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন।
তারা বলেন, ‘আমরা মনে করি, প্রথম আলোর মতো একটি প্রসিদ্ধ সংবাদমাধ্যম এ ধরনের একপাক্ষিক, যাচাইবিহীন এবং মনগড়া প্রতিবেদন দুর্ঘটনাবশত করেছে—এমনটি বিশ্বাস করার কোনো যুক্তিগ্রাহ্য কারণ নেই।
বরং এটি স্পষ্ট যে, সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক পূর্বপরিকল্পিতভাবে ছাত্রশিবিরের গঠনমূলক কর্মকাণ্ড এবং ইতিবাচক ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন। একই সাথে, প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ কোনো নির্দিষ্ট পক্ষ বা গোষ্ঠীর প্ররোচনায় এই ধরনের মানহানিকর প্রতিবেদন প্রকাশের সুযোগ দিয়েছে। আমরা প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের এই দায়িত্বহীন, অসত্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রিপোর্টের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ ছাড়া আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, ওই ঘটনার সাথে ছাত্রশিবিরের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই।’
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ইতিপূর্বে প্রথম আলো ছাত্রশিবিরকে নিয়ে একাধিক মনগড়া ও হাস্যকর শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেমন—‘শিবিরের কমিটিতে পূজা চেরী, যা বললেন নায়িকা!’, ‘২৬ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ‘শিবির নাছির’। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে ছাত্রশিবিরকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে, যা সাংবাদিকতার নীতির পরিপন্থী।
শিবিরের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ছাত্র ও জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জাতির কাছে একটি আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। এ সংগঠনের অর্থায়নের সুনির্দিষ্ট পন্থা তার গঠনতন্ত্রে সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে।
জনশক্তি ও শুভানুধ্যায়ীদের স্বতঃস্ফূর্ত অনুদানে ছাত্রশিবিরের সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তবে একটি অসাধু মহল মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে এবং পরিকল্পিতভাবে ছাত্রশিবিরের সুনাম ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। ওই প্রতিবেদন তারই অংশ বলে আমরা মনে করি।’
তারা বলেন, ‘আমরা প্রথম আলো কর্তৃপক্ষকে সাংবাদিকতার পেশাগত শিষ্টাচার মেনে অবিলম্বে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রত্যাহার, দুঃখ প্রকাশ এবং সংশোধনী প্রকাশের আহ্বান জানাই। অন্যথায় আমরা আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হবো।’