টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় বিএনপির একটি অফিসে বসে চেয়ারে পা তুলে সিগারেট টানছেন হারুন ও রশিদ নামে আওয়ামী লীগের এক কর্মী। রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সেই ছবি, যা এলাকায় ব্যাপক আলোচনা তৈরি করেছে।
‘জিয়ার সৈনিক’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে ভাইরাল হওয়া ছবিতে হারুনকে দেখা গেছে বিএনপির অফিসে বসে সিগারেট টানতে এবং টেবিলে পা তুলে থাকতে। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘বাহ্! আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি ভূমিদস্যু একাব্বর চেয়ারম্যানের ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী হারুন বলে কথা। বিএনপির অফিসে হাতে সিগারেট আর টেবিলে পা তুলে বসে থাকা সাধারণ জনগণকে মোটেও অবাক করেনি। কারণ এই এলাকায় স্বজনপ্রীতি রাজনৈতিক হালচাল। কিন্তু প্রশ্ন হলো আওয়ামী লীগের সময় এই স্বজনগুলো কোথায় ছিল?’
হারুন ছিলেন লক্ষিন্দর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী। তার বাড়ি সিংহচালা গ্রামে। তার বাবা একাব্বর আলী বৃহত্তর রসুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে লক্ষিন্দর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক।
স্থানীয়রা জানায়, জুলাই বিপ্লবের পর হারুন বিএনপির নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় প্রকাশ্যে আসেন এবং তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। এমনকি বিএনপি অফিসেও নিয়মিত উপস্থিত থাকেন এবং দিন-রাত আড্ডা দেন।
ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির সদস্য ও লক্ষিন্দর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আক্কাস আলী আকন্দ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতার দোষ কম। আমাদের নেতৃত্বেই যারা আছেন, তারা এই অফিস পরিচালনা করেন। অর্থাৎ সিনিয়ররা আওয়ামী লীগদের সঙ্গে নিয়ে অফিসে বসেন।’
হারুন ও রশিদ মোবাইল ফোনে জানান, ‘এটি আসলে বিএনপির অফিস নয়, এটি একটি খোলা ঘর যেখানে কারো-কারো যাওয়া হয়। ঘরটি উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ইকবাল তালুকদারের ভাই খোরশেদ তালুকদারের। ইকবাল আমার মামা। ছবিটি তোলা রাতে ওই ঘরে আমার সঙ্গে ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম।’
লক্ষিন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। গারোবাজারের ওই অফিসটা ইউনিয়ন বিএনপির নয়, এটি ২নং ওয়ার্ড বিএনপির অফিস।’
ইকবাল তালুকদার বলেন, ‘হারুন আমার বোনের দেবরের ছেলে, সম্পর্কের ভাগনে। কখন সে এই অফিসে এসে এমন কাজ করেছে আমি জানি না।’
শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে যদি কেউ আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঘাটাইলে বিএনপি অফিসে আওয়ামী লীগ কর্মীর উপস্থিতি এবং রাজনৈতিক সখ্যতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এই ঘটনার রাজনৈতিক প্রভাব ও উত্তরোত্তর কেমন রূপ নেবে তা নজরদারি চলছে।
তথ্য সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ