প্রথমবারের মতো সিরিয়ার হামলায় কাঁপলো ইসরায়েল

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রভাণ্ডারে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মঙ্গলবার (৩ জুন) সিরিয়া থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের কয়েক ঘণ্টা পরই এই পাল্টা হামলা চালানো হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বুধবার (৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

ইসরায়েল দাবি করেছে, সিরিয়া থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো জনবসতিহীন এলাকায় পড়েছে এবং এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে সিরিয়ার সরকারি সূত্র বলছে, ইসরায়েলি হামলায় বহু মানুষ হতাহত হয়েছে এবং বড় ধরনের সম্পদ ধ্বংস হয়েছে।সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই হামলাকে “সার্বভৌমত্বের সরাসরি লঙ্ঘন” এবং “অঞ্চলে অস্থিরতা সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা” বলে উল্লেখ করেছে। তাদের দাবি, সিরিয়া কখনোই এই অঞ্চলের জন্য হুমকি ছিল না এবং ভবিষ্যতেও হবে না।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমর্থনে বাশার আল-আসাদ সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসেন আহমেদ আল-শারা। এর পর থেকেই সিরিয়ার ভেতরে ইসরায়েলি হামলার সংখ্যা বেড়ে গেছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য সরাসরি আহমেদ আল-শারাকে দায়ী করেছেন।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, কুনেইত্রা ও দারা এলাকায় ইসরায়েলের বিমান হামলার পর ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, যা পুরো এলাকা কাঁপিয়ে তোলে। এই অঞ্চলগুলো ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমির নিকটে অবস্থিত। ১৯৭৬ সালে দখল করা এই মালভূমিতে এখনো অবৈধ বসতি সম্প্রসারণ করে যাচ্ছে ইসরায়েল, যা আন্তর্জাতিক আইনে বেআইনি হিসেবে বিবেচিত।

সম্প্রতি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসের কাছে বোমা হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, “দামেস্কের দক্ষিণে কোনও শত্রু বাহিনী মোতায়েন হতে দেওয়া হবে না।”

ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস একে সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি সতর্ক করেছেন, এই ঘটনার ফলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য গুরুতর উদ্বেগের বিষয়

Scroll to Top